মৃদু শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। ফলে বিভিন্ন স্থানে তীব্র শীতে স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। প্রতিনিধি ও সংবাদদাতাদের পাঠানো খবর।
ঝিনাইদহ: পশ্চিমের জেলাগুলোতে তাপমাত্রা সামান্য বাড়লেও শীতের তীব্রতা কমেনি। যশোর, ঝিনাইদহ, মাগুরা, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া মৃদু শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। এতে কাতর হয়ে পড়েছেন মানুষ। ঢাকা আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন বলেন, দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য খুবই কম। হিমালয় থেকে আসা শীতল হাওয়া বইছে ঘণ্টায় পাঁচ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে। এসব কারণে তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। এ অবস্থা আরো কয়েক দিন চলবে বলে তিনি জানান। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য মতে, রবিবার চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও যশোরে ছিল ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
শেরপুর: শেরপুরে শীত আর তার সঙ্গে কনকনে বাতাসের কারণে কর্মজীবী মানুষ বিশেষ করে দিনমজুর, খেতে কর্মরত চাষি, রিকশা ও ঠেলাগাড়ি চালকদের দুর্ভোগের শেষ নেই। পাহাড়ি এলাকায় অসহায় লোকজন খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।
ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর): গত আট দিনেও সূর্যের দেখা মেলেনি ঘোড়াঘাটে। কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে উপজেলার বিস্তীর্ণ জনপদ। দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা থাকছে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন। আর ঘন কুয়াশার কারণে রাতে চলাচলের বিঘ্ন ঘটছে। দিনেও দূরপাল্লার যানবাহন হেড লাইট জ্বালিয়ে রাস্তায় চলাচল করছে। হঠাত্ পৌষের শুরুতেই এমন ঠান্ডায় বিপাকে পড়েছেন সর্বস্তরের মানুষ। এদিকে শীতের কারণে ফুটপাতের গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে মানুষের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। আর ব্যবসায়ীরা এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে গরম কাপড়ের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে অস্বাভাবিক হারে।
শীতে বিপর্যস্ত জনজীবন পাবনায় ডায়রিয়াসহ নানা রোগের প্রাদুর্ভাব
পাবনা : তীব্র শীতে পাবনায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। দিনমজুর খেটে খাওয়া মানুষগুলোর চলাফেরা কর্মব্যস্ততায় পড়েছে ভাটা। শীত ও কুয়াশার কারণে রোপা আমনের বীজতলাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এদিকে জেলায় ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন শীতজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। এসব রোগে আক্রান্ত হয়ে গত ৪৮ ঘণ্টায় পাবনা জেনারেল হাসপাতালে শিশুসহ প্রায় ২০০ রোগী ভর্তি হয়েছেন এমন তথ্য নিশ্চিত করেছেন পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. রঞ্জন কুমার দত্ত।
হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, বেড না পেয়ে অনেক আক্রান্ত নারী-পুরুষ, শিশু মেঝেতে শুয়েই চিকিত্সা গ্রহণ করছেন। চিকিত্সাসেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতালের চিকিত্সক ও নার্সদের। এছাড়া নিম্ন আয়ের মানুষগুলো শহরের পুরাতন গরম কাপড়ের দোকানে ভিড় করছেন গরম কাপড় কিনতে। আর শহরের বিভিন্ন মার্কেটে বিত্তবান ও মধ্যবিত্তরা ভিড় জমিয়েছেন গরম কাপড় কেনার জন্য।
পাবনার জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ বলেন, এখন পর্যন্ত জেলায় ৩৮ হাজার কম্বল পাওয়া গেছে। ইতিমধ্যে তা ৯টি উপজেলা ও পৌরসভায় বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ তিনি নিজেই রাতে ঘুরে ঘুরে শীতার্ত ও অসহায় মানুষের মধ্যে কম্বল বিতরণ করেছেন। আরো শীতবস্ত্র ও কম্বল সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।